news paper

রাজশাহীর পবায় টিআর কর্মসূচির অর্থায়নে ইউনিয়ন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন

সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি শিক্ষায় অগ্রসর করতে রাজশাহীর পবা উপজেলায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের টিআর কর্মসূচির অর্থায়নে দর্শনপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপন করা হয়েছে ‘ইউনিয়ন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’। শিক্ষার্থীরা নামমাত্র খরচে এখানে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবে।

বুধবার (২ জুলাই) সকালে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত আমান আজিজ। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি গ্রামের শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটি মঞ্চ। এটি কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নয়, বরং গ্রামীণ যুবসমাজের আত্মবিশ্বাস ও স্বাবলম্বী হওয়ার বাতিঘর।”

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) প্রকৌশলী মো. আবু বাশির বলেন, “দক্ষতার অভাবে বেকার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। এই বেকার সমস্যা মানব সৃষ্ট আপদ । আপদ থেকেই দুর্যোগের সৃষ্টি হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মূলত দুর্যোগ প্রশমনে বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজ করে থাকে । একটি এলাকার প্রকৃত ও টেকসই উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন সেখানকার মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম দক্ষ, শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। সেই চেতনাকে সামনে রেখে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচি হতে এই ব্যতিক্রমী প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে।

দর্শনপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ আলী বলেন, “উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও আমাদের অনেক তরুণ-তরুণী বেকার। এই কেন্দ্র তাদের জন্য আশার আলো। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা ফ্রিল্যান্সিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ডেটা এন্ট্রির মতো কাজ করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।”

এক শিক্ষার্থী সাদিকুল ইসলাম বলেন, “আমি ডিগ্রির ছাত্র হলেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে কম্পিউটার শিখতে পারিনি। এখানে কম খরচে সেই সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। প্রশিক্ষণ শেষে অনলাইনে কাজ করে স্বাবলম্বী হতে চাই।”

এসএসসি ফল প্রত্যাশী মনিরা খাতুন জানায়, “পরীক্ষার পর অবসর সময়টা কাজে লাগাতে এখানে এসেছি। কম্পিউটার শিখে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমাদের গ্রামে এমন সুযোগ পেয়ে আমরা ভাগ্যবান।”

এই উদ্যোগটি গ্রামের শিক্ষার্থীদের ঘরে বসেই সম্মানজনক উপার্জনের পথ দেখাবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে দক্ষ মানবসম্পদ যোগ করে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একসঙ্গে ২০ জন শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিতে পারবে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের যেকোনো শিক্ষার্থী কম্পিউটার বেসিক, অফিস অ্যাপ্লিকেশন, ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং নেটওয়ার্কিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক/রাজশাহী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *